কোরবানির গোশত কি অমুসলিমকে দেয়া যাবে
কোরবানির গোশত খাওয়া হালাল করে দিয়ে আল্লাহ তাআলা তা অন্যকে খাওয়ানোর কথাও বলেছেন। তা যে তিন ভাগ করে খাওয়াতে হবে তা কিন্তু না। বরং তা সম্পূর্ণ বা অল্প যা ইচ্ছা অন্যকে দেয়া যাবে।
কোরবানির গোশত অন্যকে খাওয়ানোর ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,
আর কোরবানির আউট আমি আমার জন্য ওয়ার্করা নিদর্শন জানাই; আমার জন্য কল্যাণ রয়েছে। তাই দণ্ডায়মান সাধারন কর্তার উপর যুদ্ধের নাম উচ্চারণ করা যখন তখন কাতর হয়ে পড়ে তখন তাও। যে অভাবী, মানুষের কাছে পাতে না এবং সেই অভাবী হতে দিতে-তাদেরকে জানাতে। আমি ওগুলিকে অনুগত করছি; যাতে তোমরা জ্ঞান প্রকাশ কর। (সুরা হজ ৩৬)
ads24
কোনো কোনো মানুষের ধারণা কোরবানির গোশত অমুসলিমদের দেয়া যায় না। এ ধারণা ঠিক নয়। উল্লিখিত আয়াতে মুসলিম-অমুসলিম ভাগ করা হয়নি। এটাই তার প্রমাণ।
আরও পড়ুন: কোরবানির গোশত তিন ভাগ করা কি জরুরি?
বিশেষত অমুসলিম যদি প্রতিবেশী হয় তাহলে তো তাকে আরও আগেই দিতে হবে। কারণ, প্রতিবেশী হিসেবে তার হক রয়েছে। সাহাবিগণ অমুসলিম প্রতিবেশীর হকের প্রতি সবিশেষ লক্ষ্য রাখতেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর বাড়িতে একবার একটি বকরি জবেহ করা হলো। যখন তিনি বাড়িতে ফিরে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে এ গোশত হাদিয়া পাঠিয়েছ? এভাবে দুইবার জিজ্ঞেস করলেন। (তিরমিজি ১৯৪৩)
সাহাবির আমলের এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায় অমুসলিমকে কোরবানির গোশতসহ অন্যান্য হাদিয়া দেয়া যাবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ইসলামের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দেয়নি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।
আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ইসলামের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করার কাজে সহায়তা করেছে। তাদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে তারা তো জালেম। (সুরা মুমতাহিনা ৮-৯)
মুসলমানদের সদকাসমূহের মধ্যে শুধু জাকাত অমুসলিমদের দেয়া যায় না। এ ছাড়া সদকায়ে ফিতরসহ বাকি সব সদকা ও দান মুসলিমদের পাশাপাশি অমুসলিম দরিদ্রদেরও দেয়া যায়।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবার বর্ণনায় সাঈদ ইবনে জুবাইর বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সাহাবিদের বলেছিলেন তোমরা শুধু তোমাদের ধর্মের মানুষদের দান কর। তখন আল্লাহ তাআলা কোরআনের এ আয়াত অবতীর্ণ করেন,
(হে নবি) সত্য পথ গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আল্লাহ যাকে করতে সৎ পথে পথে করেন। (হে মানুষ!) যে অর্থ তোমরা তাদের কল্যাণের জন্যে। তোমরা তোমাদের জন্য সন্তুষ্টির জন্য যুদ্ধ করো। তাই দানের প্রতিদান আমাকে অবশ্যই দেওয়া হবে। তাদের অধিকার কখনো নষ্ট করা হবে না। (সুরা বাকারা ২৭২)
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর যেসব অংশ খাওয়া নিষেধ
এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা সব ধর্মের মানুষকেই দান কর।
অন্য বর্ণনায় এসেছে প্রথম দিকে মুসলমানরা অমুসলিমদের দান করতে অনাগ্রহ দেখাতেন। তারা ভয় করতেন হয়তো তারা এই দানের জন্য সওয়াব পাবেন না। তাই আল্লাহ তাআলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন।
Post a Comment
0Comments